ইয়ং বেঙ্গল আন্দোলনের সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও। অথবা, টীকা লেখো : নব্যবঙ্গ গোষ্ঠী।

ইয়ং বেঙ্গল আন্দোলনের সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও। অথবা, টীকা লেখো : নব্যবঙ্গ গোষ্ঠী।

ইয়ং বেঙ্গল আন্দোলনের সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও। অথবা, টীকা লেখো : নব্যবঙ্গ গোষ্ঠী।
ইয়ং বেঙ্গল আন্দোলনের সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও। অথবা, টীকা লেখো : নব্যবঙ্গ গোষ্ঠী।

সূচনা : ঊনবিংশ শতকের দ্বিতীয় ও তৃতীয় দশকে হিন্দু কলেজের অধ্যাপক হেনরি লুই ভিভিয়ান ডিরোজিওর নেতৃত্বে কিছু তরুণ ছাত্র পাশ্চাত্য ভাবধারার আদর্শে যুক্তিবাদ, মুক্তচিন্তা, মানসিক চিন্তা, সততার মাধ্যমে সমাজ সংস্কারে ব্রতী হয়। তারা ইয়ং বেঙ্গল বা নব্যবঙ্গ গোষ্ঠী নামে পরিচিত। তাদের পরিচালিত আন্দোলনই ছিল নব্যবঙ্গ আন্দোলন।

আন্দোলনের উদ্দেশ্য

নব্যবঙ্গ গোষ্ঠীর প্রধান উদ্দেশ্য ছিল একদিকে হিন্দুসমাজ, খ্রিস্টধর্ম ও পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রভাব থেকে সনাতন হিন্দু ধর্ম ও হিন্দুসমাজকে রক্ষা করা এবং অপরদিকে পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসার ঘটিয়ে হিন্দুসমাজের গোঁড়ামি, কুপ্রথা ও কুসংস্কারের বিরুদ্ধে জনমত গঠন করা।

নব্যবঙ্গ দলের কার্যকলাপ

নব্যবঙ্গীয়দের মূল আক্রমণের কারণ ছিল হিন্দুসমাজের চিরাচরিত কুপ্রথাগুলির বিরোধিতা করা। ডিরোজিওর ভাবধারায় উদ্বুদ্ধ ছাত্ররা ১৮২৮ খ্রিস্টাব্দে ‘অ্যাকাডেমিক অ্যাসোসিয়েশন’ নামে এক বিতর্ক সভা প্রতিষ্ঠা করেন সামাজিক কুসংস্কার ও কুপ্রথা দূর করার জন্যে। এছাড়া পার্থেনন ও ক্যালাইডোস্কোপ পত্রিকায় তাঁরা হিন্দুসমাজের বহুবিবাহ, নারীর শিক্ষা, জুরির বিচার, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ও বিভিন্ন বিষয়ে লেখালেখি শুরু করেন।

আন্দোলনের নেতৃত্ব

ডিরোজিও ছাড়াও অন্যান্য অনুগামীদের মধ্যে ছিলেন কৃষ্ণমোহন বন্দ্যোপাধ্যায়, রামগোপাল ঘোষ, রাধানাথ শিকদার, রসিককৃয়মল্লিক, রামতনু লাহিড়ী প্রমুখ।

 সমালোচনা

 খুব অল্প সময়ে এই আন্দোলন স্ফুলিঙ্গের মতো ছড়িয়ে পড়লেও তা কেবলমাত্র কলকাতা শহরের কিছু ধনী হিন্দুসমাজের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। গ্রামগঞ্জের সকল শ্রেণির মধ্যে এই আন্দোলন লক্ষ করা যায়নি। তবে তাঁরা দেশের সভ্যতার ও সংস্কৃতির দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে পাশ্চাত্যের অন্ধ অনুকরণ করতে আগ্রহী ছিলেন একথা বলা যায়। ঐতিহাসিক অমলেশ ত্রিপাঠী নব্যবঙ্গ গোষ্ঠীকে ‘নকল দেশ বলে মন্তব্য করেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *