সূচনা : প্রাচীনকাল থেকেই ভারতীয় হিন্দুসমাজে সতীদাহ প্রথার প্রচলন ছিল। ঊনবিংশ শতকের গোড়া থেকেই পাশ্চাত্য শিক্ষা ও যুক্তিবাদের প্রসার ঘটলে যে সকল সামাজিক কুসংস্কার ও কুপ্রথার বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু হয়েছিল তার মধ্যে অন্যতম ছিল সতীদাহ প্রথা বিরোধী আন্দোলন।
সার্বিক আন্দোলন: প্রাচীন হিন্দু রীতি অনুযায়ী, গোঁড়া হিন্দুদের কাছে সতীদাহ প্রথা পবিত্র ও মহান হলেও বাস্তবে তা ছিল প্রচণ্ড নিষ্ঠুর ও কুসংস্কারে আচ্ছন্ন। উনিশ শতকে কলকাতা সহ বাংলার বিভিন্ন অঞ্চলে এর বিরুদ্ধে শুরু হয় সার্বিক আন্দোলন।
কোম্পানির প্রথম পদক্ষেপ : ১৮০৫ খ্রিস্টাব্দে নিজামত আদালতে পণ্ডিত ঘনশ্যাম কমিটি প্রথম সতীদাহ প্রথা সম্পর্কে মতামত জানায়। এই মতামতের ভিত্তিতে ১৮১৩ খ্রিস্টাব্দে সরকার সর্বপ্রথম গর্ভবর্তী ও অল্পবয়সি নারীর সতী হওয়া নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।
রামমোহনের প্রচেষ্টা : মানবতাবাদী রামমোহন রায় প্রতিষ্ঠিত ‘আত্মীয় সভা সতী প্রথার বিরুদ্ধে জনমত গঠনে সচেষ্ট হয়। সতীদাহ প্রথার বিরুদ্ধে রামমোহন একটি বই লিখে প্রমাণ করেন সতীদাহ প্রথা শাস্ত্রসম্মত নয়। তাই তিনি সরাসরি সাহায্য চেয়ে উইলিয়াম বেন্টিঙ্কের কাছে আবেদন করেন।
বেন্টিঙ্কের উদ্যোগ : উইলিয়াম বেন্টিঙ্ক সতীপ্রথা বন্ধের লক্ষ্যে সরকারি কর্মচারীদের সাথে আলোচনা করে ১৮২৯ খ্রিস্টাব্দে ৪ ডিসেম্বর সতীদাহ প্রথাকে ১৭ নং 8 রেগুলেশন জারির দ্বারা নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন।